Manabendra Er Porikha.. // মানবেন্দ্রর পরীক্ষা
Episode description
তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘জলসাঘর’ গল্পটা পড়ে তাঁর মনে হয়েছিল, এটা নিয়ে একটা মিউজিক্যাল ফিল্ম বানালে কেমন হয়! ব্যস, মনে হওয়া মাত্র তারাশঙ্করের কাছে গিয়ে কিনে ফেললেন গল্পটির স্বত্ব। তখনও সত্যজিৎ রায় এটি নিয়ে ছবি করার কথা ভাবেননি। কিন্তু সেই ছবি আর করা হয়নি। না, তিনি কোনও চিত্র পরিচালক নন, তিনি বাংলা স্বর্ণযুগের এক বিখ্যাত গায়ক। নাম মানবেন্দ্র মুখোপাধ্যায়। তাঁর প্রতিটা গানেই যেন ছড়িয়ে পড়ে এক মুগ্ধ সুর মূর্চ্ছনা। আধুনিক গানের মধ্য দিয়ে যাঁরা বাংলার ধ্রুপদী সঙ্গীতকে জনপ্রিয় করেছেন, মানবেন্দ্র ছিলেন তাঁদেরই একজন। ‘ওই মৌসুমি মন শুধু রং বদলায়’, ‘আমি এত যে তোমায় ভালোবেসেছি’, ‘কোন কূলে আজ ভিড়ল তরী’ সহ অসংখ্য গানের ভিতর দিয়ে আজও বেঁচে আছে তাঁর সম্মোহনী গায়কী। তাঁকে গান শিখিয়েছিলেন স্বয়ং কাজি নজরুল ইসলাম।
তখন ‘চাঁপাডাঙার বউ’ সিনেমা তৈরির কাজে হাত দিয়েছেন পরিচালক নির্মল দে। তিনি মানবেন্দ্রকে দায়িত্ব দিলেন সঙ্গীত পরিচালনার। সেকথা শুনে তারাশঙ্কর বললেন, ‘আমার ছবিতে কে সুর দিচ্ছে, তাকে আগে একটু দেখতে চাই। তার গানের একটু পরীক্ষা নিই, তবে রাজি হব।’
তারাশঙ্করের টালার বাড়িতে পরিচালক নিয়ে গেলেন মানবেন্দ্রকে। তাঁকে দেখে ভরসা পেলেন না তারাশঙ্কর। তিনি পরিচালককে বললেন, ‘না, মনে হচ্ছে একে দিয়ে হবে না। তুমি একটা পাকা সঙ্গীত পরিচালকের খোঁজ কর।’ অবশ্য একটু পরে কী মনে হল, একটা গানের দু’টো লাইন লিখে দিয়ে মানবেন্দ্রকে বললেন, ‘একটু সুর করে দেখাও তো। এটা গাজনে শিবের নৃত্য। ছবিতে উত্তমকুমার গাইবেন।’ একটু ভেবে মনে মনে সুর করে মানবেন্দ্র গেয়ে উঠলেন। ঢাকের তালে তাল মেলানো সেই সুর একেবারে গাজনের ছন্দের সঙ্গে মিলে যায়। গান শুনে খুশি হলেন তারাশঙ্কর। বললেন, ‘না হে নির্মল। একে দিয়েই হবে।’
ছিলেন খাঁটি ইস্ট বেঙ্গল সমর্থক। লাল-হলুদ জিতলেই বড় একটা ইলিশ কিনে বাড়ি ঢুকতেন। দিলখোলা সেই মানুষটি চিরবিদায় নিলেন ১৯৯৮ সালের ১৯ জানুয়ারি।
তথ্যসূত্র:বর্তমান পত্রিকা।
সূত্রধর: অর্ণব
Facebook:
https://facebook.com/EtiTomaderArnab
Insta:
https://instagram.com/eti_tomader_arnab
Youtube: